শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য যা যা করা হবে

এডুকেশন হিরো আপডেটঃ ২৭ আগ, ২০২১

 

©Education Hero


শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চার দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে এই ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব সিদ্ধান্তের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য যা যা করা হবে :

এক. আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করোনার সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ বা তার কম থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায় । বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী পারিবারিক পরিমণ্ডলে স্বল্প পরিসরে অনেকের সাথে বসবাস করে। করোনার কারণে দীর্ঘ ১৭ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিশেষত শিশু-কিশোরেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যেতে পারায় এবং বেশিরভাগ সময় বাড়িতে থাকতে বাধ্য হওয়ায় সমবয়সীদের সাথে মেশা ও অবাধে খেলাধুলা করার সুযোগ না পাওয়ায় তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়াসহ সম্ভাব্য সব নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি সম্পর্কে সরকার সম্পূর্ন সচেতন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা রয়েছে সম্ভব দ্রুততম সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার। এ সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি থাকলেও ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যায় সে বিষয়ে জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শ চাওয়া হবে। এ বিষয়ে আগামী সপ্তাহে একটি যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো করে রাখুন সকল ধরনের আপডেট পাওয়ার জন্য। 


দুই. শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল রিওপেনিং প্ল্যান চূড়ান্ত করে রেখেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন এবং স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়টি কার্যকরভাবে মনিটরিংয়ের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক বাধ্যতামূলক দৈনিক প্রতিবেদন প্রেরণ নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহায়তায় 'চেকলিস্ট' প্রণয়ন করা হবে আগামী সাত দিনের মধ্যে।

তিন, আগামী সাত দিনের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সকল শিক্ষার্থীর তথ্য নিয়ে, যেসব শিক্ষার্থীরা এখনও টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেনি কিন্তু শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে তাদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠাবে এবং যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই কিন্তু বয়স ১৮ পেরিয়ে গেছে তাদের একটি তালিকা প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালযে পাঠাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় যাদের এনআইডি নেই কিন্তু বয়স ১৮ এর উপর তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পাওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতা চাইবে।

চার. জাতীয় পরিচয় পত্র থাকা স্বত্ত্বেও যেসব শিক্ষার্থী এখনও টিকা নিতে পারেনি তাদের এবং শিক্ষক কর্মচারী যাদের এখনও টিকা নেওয়া বাকী রয়েছে তাদের টিকাদান সহজ করবার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনে সকল জেলায় একটি (বা প্রয়োজনে একাধিক হতে পারে) করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি সহায়তায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে শুধুমাত্র শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনারও ব্যবস্থা করা হবে। 

বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন-প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মো. মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবিরসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও  গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিরা।

জানা গেছে, সংক্রমণের হার ৭-৮ শতাংশ থাকলেও খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে মাঠপর্যায়ে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকে যে কোনো সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে ক্লাস চলবে, সে ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল খুলে দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে অক্টোবর নাগাদ হলগুলো সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হতে পারে। এছাড়া সভায় ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url