‼️ কেন পড়বে নটরডেম কলেজ-এ‼️

এডুকেশন হিরো আপডেটঃ ২২ মে, ২০২৩

 ‼️ কেন পড়বে নটরডেম কলেজ-এ‼️



এসএসসি ২০২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা যারা আছো, খুব শীঘ্রই তোমাদের এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে। তারপর ই জীবনের অন্যতম একটি অধ্যায় 'কলেজ জীবন' শুরু হতে চলেছে। সঠিক কলেজে অধ্যয়ন তোমার পরবর্তী ক্যারিয়ার গড়ার পেছনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। তাই ভেবেচিন্তে তোমাকে নির্বাচন করতে হবে, তুমি কোন কলেজে পড়তে চাও। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কলেজ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রথম পছন্দের তালিকায় থাকে খ্রিস্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত নটরডেম কলেজ, সেইন্ট যোসেফ কলেজ কিংবা হলিক্রস কলেজ ( মেয়েদের ক্ষেত্রে)। 





চলো জেনে নেওয়া যাক কিছু কারণ যা তোমাকে নটরডেম কলেজে ভর্তি হতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে :

{tocify}


নৈতিকতা


খ্রিস্টান মিশনারি ফাদারদের দ্বারা পরিচালিত বিধায় নটরডেম কলেজ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নৈতিক আদর্শে পরিচালিত।ফলাফলই যে লেখাপড়ার মুখ্য উদ্দেশ্য হতে পারে না তার বাস্তব উদাহরণ নটরডেম কলেজ।প্রতি মাসের শেষ বুধবার নৈতিকতার উপর বিশেষ ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়। নটরডেম কলেজ খ্রিস্টান মিশনারী কলেজ হওয়া সত্ত্বেও এর ভেতরে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদ রয়েছে যা মূলত অসাম্প্রদায়িকতার প্রতীক হিসেবে প্রতিটি ছাত্রের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। এজন্য হয়তো নটরডেমিয়ানদের মধ্যে উদ্রবাদিতার প্রভাব কম থাকে। তবে নৈতিকতা রক্ষার্থে নটরডেম কলেজের নিয়ম কানুন অনেক বেশি কঠোর। 'দোষ করলে শাস্তি নিশ্চিত' এই ভয়েই সহজে কেউ অপরাধ করার সাহস পায় না তাই কলেজে সবসময় শান্তিপ্রিয় পরিবেশ বজায় থাকে যা লেখাপড়ার জন্য অতীব জরুরী। 


Ad from "Mahin728"



দেশসেরা শিক্ষক


দেশসেরা প্রতিভাবান শিক্ষকদের বৃহৎ অংশ তুমি পাবে নটরডেম কলেজে যারা প্রত্যকেই তাদের সাবজেক্টিভ জ্ঞানে পন্ডিত।দেশের সেরা ছাত্রদের পড়াতে পড়াতে মনের অজান্তেই তারা অসাধারণ কিছু গুণাবলি রপ্ত করে ফেলে যার ফলে তোমার আকার ইঙ্গিতেই তোমার ভেতরের প্রতিভা তারা অনুধাবন করে ফেলতে পারে যা একজন ছাত্র হিসেবে শিক্ষকের কাছে তোমার প্রথম চাওয়া বলা যেতে পারে।আমি শুধু বলব না যে এরা ক্লাশে ১১০% দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করে বরং বলব নিজের ভেতরের শক্তিকে খুজে পেতে সাহায্য করে যা অতীব জরুরী ব্যক্তিজীবনে সফলতার পাওয়ার জন্য। যেকোনো ধরনের সমস্যায় তাদের কাছে সাহায্য চাইলে তারা যেভাবে নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেন তা তুমি অন্য কোথায় পাবে না সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারো।কে না চায় এমন শিক্ষকদের সান্নিধ্য পেতে!


সেরাদের সংস্পর্শ


আচ্ছা, একটু ভেবে দেখ তো, যে ছেলেটা বুয়েট/মেডিকেল/ঢাবি তে প্রথম হবে সে তোমার পাশেই বসে এবং তোমার সামনের ছেলেটা এবার অমুক অলিম্পিয়াডে আমাদের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে এবং তোমার পেছনের ছেলেটা অসাধারণ দাবা খেলতে পারে...কে চাইবে না এমন সঙ্গের সংস্পর্শে আসতে! নটরডেম কলেজে এটা খুব সাধারণ একটা বিষয়।মজার ব্যাপার কি জানো? যে ছেলেটা ট্যালেন্ট-হান্টে দেশ সেরা হয়েছে সেও অনেকের কাছে সেই বিষয়েই পাত্তা পায় না কলেজের বিভিন্ন প্রতিযোগীতায়!ভালোর থেকেও যে ভালো থাকতে পারে সেটা তুমি বুঝতে পারবে নটরডেম কলেজে। আশেপাশের সব মেধাবীদের ভীরে যদি তুমি টিকে যেতে পারো তাহলে তোমাকে আর কখনও পিছে ফিরে তাকাতে হবে না এ ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারো। 


দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক


প্রতিটি জেলার একজন করে হলেও তুমি তোমার গ্রুপে পাবে। তুমি যদি ইচ্ছে করো তাহলে কিন্তু খুব সহজেই ৬৫ জেলার সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলতে পারো! তাছাড়া বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা আয়ত্ব করার সুযোগ তো থাকছেই।তুমি যেখানেই যাও নটরডেমিয়ান বড় ভাই পাবেই এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় ভাইদের সাপোর্ট তোমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। 


ক্লাব কার্যক্রম


নটরডেম কলেজে রয়েছে ২৩টি ক্লাব যার প্রতিটি অত্যন্ত সক্রিয়। তোমার যেদিকে আগ্রহ তুমি সেই বিষয়ে যেন নিজেকে সর্বোচ্চ প্রকাশ করতে পারো তার পরিবেশ তৈরি করাই এই ক্লাবগুলোর মূখ্য উদ্দেশ্য।তাছাড়া এই ক্লাবগুলো প্রায়ই বিভিন্ন সেমিনার,ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিজেকে প্রকাশ করার জন্য এই ক্লাবগুলো অনেক বড় একটি প্লাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে তোমার জন্য। 


কুইজ


নটরডেম কলেজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এরা সবসময় চাপের মধ্যে রাখে একজন ছাত্রকে যাতে তারা সবসময় পড়ার মধ্যে থাকে। এজন্য সপ্তাহে দুটি করে পরীক্ষা নেয়া হয় যা কুইজ নামে পরিচিত।মাত্র ৩০ মিনিটের এই পরীক্ষায় অপেক্ষাকৃত কম সময়ে বেশি প্রশ্ন উত্তর দিতে হয়। তাছাড়া এই পরীক্ষা সারা বছরই চলমান থাকে বিধায় নটরডেমিয়ানরা পরীক্ষা দিতে দিতে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং জীবনের কোনো পরীক্ষাতেই তাদের কোনোরকম ভয়ভীতি কাজ করে না যার প্রতিফলন দেখা যায় ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে।


ল্যাব


শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞানে নটরডেম কলেজ বিশ্বাসী নয় তাই প্র্যাক্টিকালের ব্যাপারে কলেজ অনেক বেশি কঠোর। তুমি যতই ফাকিবাজ আর অলস হও না কেন নটরডেম তোমাকে দিয়ে প্রতিটি প্র্যাক্টিকাল করিয়েই ছাড়বে! সব কিছু হাতে কলমে করার মাঝে এক অন্যরকম আনন্দ আছে যা জ্ঞানার্জনকে আরো জীবন্ত করে তোলার পাশাপাশি একজন ছাত্রকে আরো বেশি বেশি জ্ঞান চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে।ছাত্রাবস্থায় ল্যাব প্যারাদায়ক মনে হলেও পরবর্তীতে এর মূল্য প্রতিটি ছাত্র অনুধাবন করতে পারে। 



ফেস্ট


তুমি যদি ভেবে থাকো যে নটরডেম শুধু জ্ঞান অর্জন নিয়েই ব্যস্ত থাকে তাহলে তুমি বড্ড ভুল ভেবেছ। সারা বছরই একের পর এক ক্লাবের ফেস্ট থাকে এবং সেই ফেস্টকে কেন্দ্র করে কলেজ প্রাঙ্গণকে অলংকিত করা হয় নানা আঙ্গিকে এবং নানা কর্মকান্ডের মাধ্যমে তা উদযাপন করা হয় যা তোমার স্মৃতির ভান্ডারকে করবে আরো সমৃদ্ধ এবং আনন্দময়।  


ক্যাম্পাস


অসাধারণ গাছগাছালিতে ঘেরা আমাদের নটরডেম কলেজ। মাঠ এবং কলেজের চারদিকে হরেক রকমের গাছ এর সৌন্দর্য্য কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। হ্যারিংটন ভবনের সামনের বাগানের ফুলগুলো যে কারো মনকে যেকোনো সময় উদাসীন করে দিতে পারে!বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে বাস্কেটবলের নামে রাগবি খেলে কিংবা প্রতি টিমে ২০জন করে রেখে মাঠে ফুটবলের নামে প্রহসনের অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ কে চায় হাতছাড়া করতে!


সম্মান


সব যদি আমি বলে দিই তাহলে তুমি নিজ থেকে কি আবিষ্কার করবে? এই বিষয়টি না হয় তোমার উপরেই ছেড়ে দিলাম! 


(বাংলাদেশে আরো তুমি ভালো কলেজ পাবে যারা লেখাপড়ার জন্য সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করে কিন্তু নটরডেম কলেজ তার অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য নিজেকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে।এজন্যই হয়তো দেশসেরা মেধাবীদের সিংহভাগের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে নটরডেম কলেজ)। 

তথ্যসূত্র : সংগৃহীত 


~ Zaheed Akash

Ex-Notredamian, Batch'18

DoFE, BUTEX

Senior Chemistry Instructor, Bondi Pathshala {alertSuccess}

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url