কেমন আছেন সেই বেলায়েত? - Education Hero
Admin আপডেটঃ ১০ জুন, ২০২৩
পারিবারিক অসচ্ছ্বলতার কারণে ১৯৮৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি গাজীপুরের মো. বেলায়েত শেখ। এসময়ের মধ্যে বিভিন্ন কাজ শেখে উপার্জনের মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারের হাল ধরেন। নানা টানাপোড়েনে পড়াশোনা সম্পন্ন করতেনা পারলেও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থেকে ৫০ বছর বয়সে এসে আবার ভর্তি হয়েছেন নবম শ্রেণীতে। এসএসসি এবং এইচএসসি সম্পন্নকরে ২০২১-২২ সেশনে শুরু করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। এখন কেমন কাটছে ৫০ উর্ধ্বো বেলায়েতের স্নাতক জীবন?
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বেলায়েত জানান, ছোটবেলায় পড়াশোনা করার জন্য পরিবারের আর্থিক সাপোর্ট দেয়ার মত অবস্থা ছিলনা। মানুষের কাজ করে নিজের পড়াশোনা চালাতে হত। এসএসসি পরীক্ষার সময় পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো খারাপহয়ে গেলে পড়াশোনা ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। তখন সিলেট বরইকান্দি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে মেকানিক্যালেমিনি ডিপ্লোমা করেন তিনি। এরপর সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন।
জেদ থেকে নিজেকে নতুন করে গুছিয়ে নিতে তিনি আবার শিক্ষা জীবন শুরু করার পদক্ষেপ নেন। তিনি জানান, এর মাঝে ৩৪বছর তিনি বিভিন্ন ধরনের কাজ করেছেন। গাজীপুরের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় ফটো সাংবাদিক হিসেবেও কিছুদিন কাজকরেছেন।
বেলায়েত শেখ গাজীপুরের শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের হাছেন আলীর ছেলে। তার জন্ম ১৯৬৮ সালে। তিনি তিনসন্তানের বাবা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য মধ্য বয়সে এসে আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন তিনি। তাঁর এইঅদম্য চেষ্টা কারণে তিনি দেশজুড়ে বেশ আলোচিত।
২০১৭ সালে নিজেকে গড়ার প্রত্যয়ে নতুন করে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন বেলায়েত। ২০১৯ সালে এসএসসি এবং ২০২১ সালেএইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ১ম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। এতে ২৬ দশমিক০২ পেয়ে অনুত্তীর্ণ হলে পরে অংশ নিয়েছেন আরো ৩টি পাবিলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়।
সেসব পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হলেও রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাক্রম ৫ম হয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। পরবর্তীতেপরিবারের ইচ্ছায় সেখানে না গিয়ে রাজধানীর স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। এখন সেখানেই চলছেতার উচ্চশিক্ষা। তিনি ক্লাসে যেমন মনোযোগী, তেমনি অবসরে বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-খেলায় মেতে থাকেন।
স্নাতক জীবন সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, পাঠদান ইংরেজী মাধ্যম হওয়াতে এবং ইংরেজীতে দুর্বলতার কারণে প্রথম দুইসেমিস্টারে ৩.০০ পয়েন্ট উঠানো না গেলেও কঠোর পরিশ্রমের ফলে প্রথম শ্রেণীর কাছাকাছি ফলাফল পেয়েছি। বর্তমানে ৩য়সেমিস্টারে অধ্যয়নরত আছি।
বেলায়েত জানান, ইংরেজীতে দুর্বলতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন। পরবর্তী সেমিস্টারে ৪.০০ পাওয়ার আশা করছেন তিনি।তিনি বলেন, আমি মানসম্মত একটি ফলাফল নিয়ে স্নাতক জীবন শেষ করতে চাই। সাংবাদিকতা এবং শিক্ষকতা করে বাকিজীবন পার করতে চাই।